ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা : ১৯৪৭ থেকে ২০১৯ [ভিডিও]

-

  • ২৫ আগস্ট ২০১৯, ২২:৩৪

কাশ্মীরের পুলওয়ামায় স্বাধীনতাকামীদের হামলার পর ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের আকাশসীমা অতিক্রম করে বোমা হামলা চালিয়েছে।ভারতের দাবি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের বালাকোট সেক্টরে জইশে মোহাম্মদের প্রধান প্রশিক্ষণ শিবির। পাকিস্তান দাবি করেছে ভারতীয় যুদ্ধ বিমানগুলো তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় খোলা মাঠে বোমা ফেলেছে। একই সাথে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। তবে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা সংঘাতের ইতিহাসটা অনেক পুরনো। এর আগেও বহুবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাস, সবেমাত্র দু’টি দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই সময় থেকেই কাশ্মীর নিয়ে সংঘাতের সূত্রপাত।

১৯৬৫ সালের অগস্ট মাস। শুধুমাত্র কাশ্মীর নয়, গুজরাতের কচ অঞ্চল নিয়েও সংঘাত তৈরি হয়। ৯ এপ্রিল পাক সেনাবাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করে এবং দাবি করে যে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাঞ্জারকোটের পাকিস্তানি চৌকি আক্রমণ করেছে। আন্তর্জাতিক সীমারেখা বরাবর পঞ্জাব ফ্রন্ট খোলার পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী। যুদ্ধে ভারত বড় ধরনের বিপর্য়ের মুখে পড়ে।

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর। ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে একের পর এক পাক ফাইটার জেট। পাক বিমানহানার পরই বিশেষ জরুরি বৈঠক ডেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। রাতেই পাক বিমানহানার প্রত্যুত্তর দেয় ভারতীয় বিমানবাহিনী। সেই ’৭১-এর ডিসেম্বরে ১৪ দিনের যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম।

১৯৯৯ সালের মে মাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কার্গিল সীমান্ত এলাকা দখল করে। ভারতীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়ে ভারতীয় বাহিনী। মাস দুয়েকের পরে পাকিস্তান সেনা বাহিনী দখল করা স্থান ত্যাগ করে।

২০০১ সালের অক্টোবরে কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের হামলায় প্রাণ হারান ৩৮ জন, ঠিক দু’ মাস পরে ভারতের সংসদ চত্বরে হামলায় প্রাণ হারান ১৪ জন। সেই সময়ও দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।  

২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১৬৬ জন। ভারত অভিযোগ করে পাক মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গিগোষ্ঠীই ছিল এই হামলার জন্য দায়ী।

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে পঞ্জাবের পাঠানকোটে ভারতের বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে চারদিন ধরে হামলা চালায় কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীরা। সাত জন সেনা প্রাণ হারান, অভিযানে মৃত্যু হয় ছয় স্বাধীনতাকামীর।

২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের উরি সেক্টরে ১৯ জন ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। যার জবাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দাবি করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পারে জঙ্গি লঞ্চপ্যাডগুলিকে নিশানা করে অভিযান চালানো হয়। ভারত দাবি করে ৩৫ জঙ্গির মৃত্যু হয় তাতে।

তবে কার্গিল যুদ্ধের সময়েও ভারতীয় সেনা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশসীমা পেরিয়ে ঢোকেনি পাকিস্তানে। ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পর পাক আকাশসীমার এতটা ভিতরে আর কখনও ঢোকেনি ভারত।